আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যখন দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী সেই সময়ে মাস্ক পরা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছেয়ে গেছে বিভ্রান্তিমূলক নানা পোস্ট ও ভিডিওতে।
বিবিসি’র রিয়ালিটি চেক বিভাগ মাস্ক নিয়ে নানাধরনের দাবির সত্যতা যাচাই করে তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কোভিড-১৯-এর বিস্তার ঠেকাতে আমেরিকায় মাস্ক পরার বিরোধী যারা তারা প্রকাশ্য জনসভা এবং সামাজিক মাধ্যমে মাস্কের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। যেসব রাজ্যে দোকানের ভেতর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সেখানে মাস্ক প্রতিহত করতে উদ্যোগী মানুষের ভিডিও ফুটেজ অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে আমেরিকার বিচার বিভাগ এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, কেউ কেউ প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরার নিয়ম থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে যে ছাড়পত্র দেখাচ্ছে তা জাল করা কার্ড। জাল ছাড়পত্রের একটি ভার্সনে এমনকি বিচার বিভাগের সিলমোহরও দেয়া হয়েছে এবং ‘ফ্রিডম টু ব্রিদ এজেন্সি’ নামে নি:শ্বাস নেবার অধিকার সংক্রান্ত একটি সংস্থার লিংকও জুড়ে দেয়া হয়েছে। কার্ডে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কাউকে জোর করে মাস্ক পরতে বাধ্য করলে তথাকথিত এই সংস্থার কাছে সেই দোকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
কিন্তু সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই কার্ডের কোন আইনপ্রয়োগকারী ক্ষমতা নেই। ‘ফ্রিডম টু ব্রিদ এজেন্সি’ নামে সরকারের কোন সংস্থা নেই। একটি তথ্য অনুসন্ধান সংস্থা জানাচ্ছে ফ্রিডম টু ব্রিদ এজেন্সি একটি ফেসবুক গ্রুপ যারা নিজেদের আমেরিকান নাগরিকের স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তা রক্ষায় নিবেদিত একটি গর্বিত আন্দোলন গোষ্ঠী বলে পরিচয় দিয়েছে।
তাছাড়া এরইমধ্যে মাস্ক পরার গুণাগুণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াচ্ছে নানা ধরনের খবর। একটি গ্রাফিক চিত্র সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হয়েছে কয়েক হাজার বার। এতে রয়েছে বিভ্রান্তিকর দাবি। এতে তুলে ধরা হয়েছে আপনি ফেস মাস্ক পরলে আপনার কী হতে পারে?
ইনস্টাগ্রামে আবার এটি ভুয়া বলেও পোস্ট দেয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ এ ব্যাপারে খুবই স্পষ্ট। শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়া যায় এমন জিনিস দিয়ে তৈরি ফেস মাস্ক যদি ঠিকমত পরা হয় তা শরীরের জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না।
এছাড়াও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক-এ একজন ডাক্তারের স্বীকারোক্তি নামে একটি ভিডিও ১৫ লক্ষ মানুষ দেখেছে। ভিডিওটিতে ওই ডাক্তার স্বীকার করছেন করোনাভাইরাস আক্রান্তের হিসাব বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তার ভিডিও প্রথম পোস্ট করা হয় ফেসবুকে। সেখানে এর ভিউ ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার। ভিডিওতে স্থানীয় একটি হাসপাতালের কথা বর্ণনা করা হয় এবং তিনি বলেন এই তথ্য সরাসরি একজন ডাক্তারের দেয়া। টিকটকের যে অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয় তাতে ভিডিওতে কে কথা বলছেন তা বলা হয়নি। যে হাজার হাজার মানুষ ভিডিওটি দেখে মন্তব্য করেছেন তারা স্পষ্টতই ধরে নিয়েছেন আমেরিকার কোন হাসপাতাল সম্পর্কে এই বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে এই মহামারিকে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং রাজনৈতিক ভাঁওতা হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যা দেখেছে সাড়ে সাত লাখ মানুষ। ভিডিওটিতে নানা ধরনের ভিত্তিহীন দাবি তুলে ধরা হয়েছে যেখানে আমেরিকায় নির্বাচনের বছরে একটা মহামারি তৈরি করার গভীর ষড়যন্ত্রের গল্প বলা হয়েছে। ভিডিওতে মানুষকে বলা হচ্ছে মাস্ক খুলে ফেলে দাও।
Leave a Reply